বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২৫

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
শেবাচিমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গণধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী গৃহবধূ

শেবাচিমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গণধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী গৃহবধূ

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদক: মামলা করার অপরাধে প্রতিবন্ধি গৃহবধূকে আদালতের সামনে থেকে অপহরণের পর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্বামী এবং তার সহযোগিতাদের বিরুদ্ধে। এর ফলে আজীবনের জন্য মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। অপহরণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হিন্দু ধর্মাবলম্বি ওই গৃহবধূ বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে ফজলুল হক এভিনিউ সড়ক থেকে প্রতিবন্ধি গৃহবধূকে অপহরণ করা হয়। ৩০ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গ্রামের বাসিন্দা।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ জানান, ‘পারিবাকি প্রস্তাবের মাধ্যমে ২০১৩ সালে স্বরূপকাঠীর নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িয়ানা আদাবাড়ি গ্রামের বিনেন্দ্র মিত্রর পুত্র প্রবীর মিত্রর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবি অনুযায়ী নগদ দুই লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণালংকার সহ বিভিন্ন মূল্যবাহন মালামাল যৌতুক হিসেবে দেয়া হয়।
কিন্তু বিয়ের এক বছর না হতেই স্বামী প্রবীর মিত্র ও তার পরিবারের লোকেরা গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দিতে বলে। তাদের এ দাবী প্রত্যাক্ষান করেন শারীরিক প্রতিবন্ধি গৃহবধূ। সেই থেকে তার ওপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার। এমনকি এক সময় ঘর থেকেও বের করে দেয়া হয় তাকে।

এ ঘটনায় গৃহবধূ বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত গৃহবধূ। আসামীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক স্বামী সহ তিনজনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পুলিশকে। সে অনুযায়ী গৃহবধূর শাশুরী আরতি মিত্র ও দেবর পার্থ মিত্রকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।
গৃহবধূ জানান, ‘গত ১৬ এপ্রিল মামলার কার্যক্রম শেষ করে দুপুরে আদালত থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে আদালতের সামনে ফজলুল হক এভিনিউ সড়কে অপরিচিত এক লোক তাকে কথা শোনার জন্য পথরোধ করে। কৌশলে তার মুখে রুমাল ধরলে অচেতন হয়ে পড়েন গৃহবধূ। প্রায় দুই ঘন্টা পরে জ্ঞান ফিরতে একটি পরিত্যাক্ত নির্জন ঘরের মধ্যে নিজেকে আবিস্কার করেন গৃহবধূ। দেখতে পান তার চার দিক ঘিড়ে দাড়িয়ে আছে স্বামী প্রবীর মিত্র, ননদ জামাই মানব চন্দ্র, গৌরাঙ্গ নাথ সহ আরো কয়েকজন অজ্ঞাত লোক।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলা দায়েরের খেসারতের কথা বলে স্বামী ও ননদের জামাই সহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এর ফলে দ্বিতীয়বারের মত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। দ্বিতীয়বার জ্ঞান ফিরলে দেখতে পান কোন এক রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছি। পরে পথচারীদের সহযোগিতা নিয়ে হাসপাতালে পৌছালে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে গাইনী বিভাগে ভর্তি করে দেন।

এদিকে ঘটনার দু’দিন পরে অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল গণধর্ষণের অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে স্বামী প্রবীর মিত্র গৃহবধূর পূর্বের যৌতুক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পন করে। এসময় বিচারক তাকে জেলে প্রেরনের নির্দেশ দেন।এ প্রসঙ্গে শেবাচিম হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, ‘গণধর্ষণের ফলে গৃহবধূর অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাছাড়া ওই গৃহবধূ আর কখনো মা হতে পারবে কিনা বিষয়টি নিয়েও আশংকা দেখা দিয়েছে। আমরা তাকে ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছি। তাছাড়া তার নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। তাই তাকে আইনী সহায়তার জন্য হাসপাতালের ওসিসিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে ওসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘গৃহবধূর অভিযোগ শোনা হয়েছে। আপাতত তার চিকিৎসা চলছে। তাছাড়া এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা হবে। সে বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করেছি।

কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি প্রথমে আমার জানা ছিলো না। এমনকি কেউ অভিযোগ নিয়েও আসেনি। পরে জানতে পেরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছি। গৃহবধূ বর্তমানে ওসিসি’র তত্ত্বাবধায়নে রয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net